যেখানে একটি পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন নিতে পোড়াতে হচ্ছে বহু কাঠখড়। সেখানে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরী করতে মাত্র ১ থেকে ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ঘরে বসেই বনে যাচ্ছেন সম্পাদক, প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক। ইউটিউভ চ্যানেল খুলে অনেকেই টিভি চ্যানেল বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।.
সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জসহ প্রতিটি উপজেলায় বাড়ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যা। বেড়ে গেছে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের সংখ্যাও। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকতার স্থান। মানা হচ্ছে না অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরীর নীতিমালা। এসব নাম সর্বস্ব নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। .
টাকার বিনিময়ে ৮ম শ্রেণি থেকে শুরু করে নানা ধরণের ব্যবসায়ীরাও বনে যাচ্ছেন সম্পাদক, প্রকাশক এমনিক সাংবাদিকও। টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রেসকার্ড/আইডিকার্ড। অনেকেই আবার নিজের স্বাক্ষরিত কার্ডে নিজেই সম্পাদক প্রকাশক, স্টাফ রিপোর্টার কিংবা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি’র কার্ড ব্যবহার করছেন।.
আবার ভূয়া সম্পাদক সেজে সারাদেশেই প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি ও দিয়ে রেখেছেন। নিউজ আপলোড দেয়া হয় এক জায়গা থেকে অথচ নিবন্ধনহীন নিউজ পোর্টালের ঠিকানা দেয়া হয়েছে অন্য জায়গার। প্রতিটি উপজেলায় ই ৩/৪টা করে অনলাইন রয়েছে। সহজ-সরল লোকদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছেন কারি কারি টাকা। .
এসব অপসাংবাদিকতা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল। সূত্র জানায়, কিছু দিন পূর্বে যারা ছিল ব্যবসায়ী, ড্রাইভার, রাজনৈতিক নেতা,কর্মহীন যুবক, ঠিকাদার কিংবা দালালের কাজে নিয়োজিত ছিল তারাই আজ এসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের বদৌলতে সাংবাদিকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই হুট করে বনে যাচ্ছেন জেলা উপজেলার বড় মাপের সাংবাদিক।.
তারা নিজেদেরকে পরিচয় দিচ্ছেন সম্পাদক, প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক হিসেবে। যে কোন দপ্তরে গিয়েই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ব্ল্র্যাকমেইলিংয়ে মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ সব অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা সময়ের দাবী। আর এসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের কারণে বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজির ঘটনা।.
এদের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকরা হারাচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা। এতে করে জেলার মূলধারার সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন সিনিয়র সাংবাদিকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হঠাৎ করে কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মনগড়া ও তথ্যহীন রিপোর্ট তৈরী করে অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করে তাদের ইমেজ নষ্ট করা হচ্ছে। .
আবার উপর থেকে চাপ আসলে সাথে সাথে তা ডিলিটও করে দিচ্ছেন। সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ গত কিছুদিন পূর্বে বলেছিলেন, “সরকার কর্তৃক নিবন্ধন ব্যতীত কোন নিউজ পোর্টালের গ্রহণ যোগ্যতা নাই এবং তারা কোন সাংবাদিক নয়। এদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।” .
অথচ একটি পত্রিকার অনুমোদন নিতে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা বারবার যাচাই-বাছাই করণের মাধ্যমে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। আর এসব পত্রিকা কিংবা গণমাধ্যমের মালিকরা সরকারের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন। ফলে ইচ্ছে করলেই যে কোন বিষয়ে সংবাদ প্রচার করতে পারেন না। .
ডে-নাইট-নিউজ / হবিগঞ্জ, প্রতিনিধি:-
আপনার মতামত লিখুন: